গণপ্রহরী ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বিশ্বযুদ্ধের দিকে । আপাতদৃষ্টে তাই। প্রায় তিন বছর হতে যাচ্ছে অর্থাৎ ৩৩ মাসের অধিক সময় চলছে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদের মোড়ল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র অর্থাৎ মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা শক্তিসমূহ ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিচালনার নির্ভরশীল শক্তি। পক্ষান্তরে সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়া অর্থাৎ রুশ সাম্রাজ্যবাদ এ মূহুর্তে একাই একশ। সাম্রাজ্যবাদী দ্বদ্বের ফলশ্রুতির এই যুদ্ধ এ মূহুর্তে শক্তি প্রদর্শনের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়।
শক্তি প্রদর্শনের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া যেমন সব রকম যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করে জিততে চায়। পক্ষান্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া অব্যাহত রাখা। যুদ্ধ বন্ধ হওয়ার বা বন্ধ করার পথ সহজতর ছিল। তখন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শের সাথে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে তা ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ইউক্রেন দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাত হানে রাশিয়ার অভ্যন্তরে। এর জবাব দিতে রাশিয়া হাইপারসনিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায়। অর্থাৎ শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগীতা। তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বিশ্বযুদ্ধের দিকে?
এদিকে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর, গণমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকে নতুন করে শুরু হয়েছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনাÑপর্যালোচনা। রাশিয়ার আন্তমহাদেশীয় ব্যালিষ্টিক ক্ষেপনাস্ত্র (আইসিবিএম) দিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের। তবে ইউক্রেন নিশ্চিত করেনি মূলত: কি অস্ত্র ব্যবহার করেছিল মস্কো। তবে ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তৈরী দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে। সূত্র মতে আইসিবিএমটির নাম আর এস-২৬ রুবেঝ। পাঁচ হাজার আটশ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্য বস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম আর এস-২৬ রুবেঝ।
পক্ষান্তরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বৈশ্বিক যুদ্ধের বৈশিষ্ট দেখছেন-উল্লেখ করে বলেছেন দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতিদাতা পশ্চিমা দেশগুলোর স্থাপনায় আঘাত হানতে পিছপা হবে না মস্কো। বাহ্যিকভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মনে হলেও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন দেশ। তিনি বলেছেন, মস্কোর ছোড়া ক্ষেপনাস্ত্র আইসিবিএমের মতো পারমানাবিক অস্ত্র বহন করার ক্ষমতা সম্পন্ন উল্লেখ করে বলেছেন, ইউক্রেনকে অস্ত্রদাতা ও অনুমতিদাতাদের দেশগুলোর সামরিক স্থাপনায় হামলার বিষয়টিও রাশিয়া বিবেচনা করেবে।
অপরদিকে সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো মনে করে মস্কো যে ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাত হেনেছিল কিয়েভে, সেটা মধ্য পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র। সিএসআইএসÑসূত্র মতে, রাশিয়া ২০১২সালে আরএস-২৬-রুবেঝ ক্ষেপনাস্ত্র সফল ভাবে উৎক্ষেনাস্ত্র আরএস-২৬- রুবেঝ ক্ষেপনাস্ত্র সফল ভাবে উৎক্ষেপন করে। ৩৬ হাজার কেজি ওজনের ৪০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন ক্ষেপনাস্ত্র আরএস-২৬ রুবেঝ ৮০ কেজি ওজনের পারমানবিক অস্ত্র বহন করার ক্ষমতা অব্যাহত রাখে। তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি বিশ্বযুদ্ধের দিকে?
ন্যাটো আগামী ২৪ নভেম্বর মঙ্গলবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউক্রেনের সাথে আলোচনা বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ান ও যুক্তরাজ্য রাশিয়ার অভ্যন্তরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে আঘাত হানার বিষয় বলেনি। তবে ন্যাটোর এক মুখপাত্র সক্ষমতা সম্পন্ন এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার যুদ্ধের গতিপথে পরিবর্তন আনবে না।যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরণের শক্তিশালী ক্ষেপনাস্ত্র ইতিহাসের স্বাক্ষ্য মতে প্রথম যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলো। যদি তা সত্যি সত্যিই হয়ে থাকে। এ খবর লেখা পর্যন্ত ইউক্রেন নিশ্চিত করেনি। তবে যুদ্ধ মানে যেহেতু ধ্বংস, সে যুদ্ধ শান্তিকামী বিশ্ববাসীর কাম্য নয়।